আসসালামুয়ালাইকুম বন্ধুরা আশা করি আপনারা সকলেই ভালো আছেন ।
আদর্শবান স্ত্রীর ১০টি গুন।
যে নারীর ভেতর এই ১০টি গুন থাকবে, সে জান্নাতে যাবে, ইনশাআল্লাহ
আমি
আপনাদেরকে অনুরোধ করবো ভিডিওটি একেবারে শেষ পর্যন্ত দেখার জন্য। আজকের আমাদের
ভিডিওর লাইক টার্গেট দশ হাজার,
আশা করি আপনারা ভিডিওটিতে এখনেই লাইক দিয়ে
টার্গেট পূরণ করে দেবেন এবং চ্যানেলটি
সাবস্ক্রাইব করে রেখবেন । তো
চলুন শুরু করি ।
একজন আদর্শবান স্ত্রীর মধ্যে দশটি গুন রয়েছে। একজন পুরুষ চায় সে যেন একজন
আদর্শবান স্ত্রীকে পায়। আবার একজন নারীও চায় সে যেন একজন আদর্শবান স্বামী পায়। তাই
আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন; বিশ্বনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম বলেছেন, গোটা পৃথিবীর মধ্যে যত নেয়ামত আছে, তার মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ নেয়ামত
হচ্ছে, একজন নেককার স্ত্রী।
যে ঘরে একজন নেককার স্ত্রী রয়েছে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
বলেন সে ঘরটি একটি জান্নাতের বাগান হয়ে যায়। আর যে ঘরে একজন বদকার স্ত্রী রয়েছে, সে
ঘরটি গোটা একটি জাহান্নামের গর্ত হয়ে যায়।
একটা স্ত্রী পারেন তার ঘরটি সুন্দর করে সাজাতে। আবার একজন স্ত্রীই পারেন
একটি সুন্দর সংসারকে ধ্বংশ করে দিতে। এজন্য প্রত্যেকটি স্বামী চান, তিনি যেন একজন নেককার
স্ত্রী পান।
প্রিয় দর্শক বলছিলাম একজন আদর্শ স্ত্রীর দশটি গুন সম্পর্কে। সে গুন গুলো
হলো;
এক নম্বর; পাচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করা। একজন আদর্শবান স্ত্রীর এক নাম্বার
আদর্শ হচ্ছে, পাচ ওয়াক্ত সালাত খুশু খুজুর সাথে আদায় করবে। এবং সে যেকোন পরিস্থিতিতে
থাকুক না কেনো, যতই কষ্ট হোক না কেন, তিনি এই নামাজ কোনভাবেই ছাড়বেন না।
দুই নাম্বার হচ্ছে; স্বামীর কথা শোনা এবং আনুগত্য করা। যে স্ত্রী স্বামীর
কথা শুনবে, স্বামীকে ভালোবাসবে, কিন্তু স্বামী যদি অন্যায় করতে বলে, সেটা না করে তাকে
বোঝাবে এবং স্বামীর ভালো উপদেশগুলো অবশ্যই পালন করবে, বিশ্বনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম তাদেরকে শ্রেষ্ঠ রমনী বলেছেন। আর যদি কোন স্ত্রী তার স্বামীকে অমান্য করে
তার উপরে বিশ্বনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম লানত দিয়েছেন।
আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যখন আমি জাহান্নাম
দেখতে গেলাম, তখন সেখানে আমি জাহান্নামীদের মধ্যে অধিকাংশ নারীদের দেখতে পেলাম। তার
একটি কারণ তারা স্বামীদের আনুগত্য করে না। প্রিয় দর্শক আমাদের দেশে এমন অনেক স্ত্রী
আছেন, যারা স্বামীকে অভিসাপ দিয়ে থাকেন।
তিন নম্বর হচ্ছে; আদর্শবান স্ত্রীর
তিন নম্বর গুন হলো, সবসময় স্বামীকে খুশি করার চেষ্টা করা। তারা আচার-আচরণ, কথা বার্তার
এবং খিদমতের মাধ্যমে তাদের স্বামীকে খুশি করার চেষ্টা করবে। স্বামীর মন খারাপ তখন একজন
আদর্শবানন স্ত্রী চেষ্টা করে, কিভাবে স্বামীর মন ভালো করা যায়। আবার কিছু স্ত্রী আছে,
স্বামীর মন খারাপ কিন্তু সে কোনভাবে তার স্বামীর মন ভালো করার চেষ্টা করেনা। উল্টো
সেও আরেক কোণার মধ্যে নিজের মত বসে থাকে, এমনকি তার কোন খোজ খবর নেয় না। সে কখনো একজন
আদর্শবান স্ত্রী হতে পারে না। আদর্শবান স্ত্রী কেবল মাত্র তারাই যারা স্বামীর সুখটা বুঝবে, এবং দুঃখটাও বুঝবে। তাই
সুখের সময় যেমন স্বামীর পাশে থাকবে, তেমনি দুঃখের সময় সর্বদা তার পাশে থাকবে।
চার নাম্বার হচ্ছে; ঝগড়া এবং রাগারাগি থেকে বিরত থাকা। একজন আদর্শবান স্ত্রী কখনই তার স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া বা রাগারাগি
করতে পারে না। যখন তাদের স্বামীর রাগ থাকবে, তখন তারা চুপ থাকবে। এবং যখন পরিস্থিতি
ঠান্ডা হয়ে যাবে। তারপর স্বামীর ভুল থাকলে তা বুঝিয়ে বলবে। এবং স্বামীর রাগ ভাঙ্গানোর
চেষ্টা করবে। এছাড়াও তারা সর্বদা ধৈর্য্য ধারণ করে থাকবে। এবং আউযুবিল্লাহ হিমিনাস
শাইতয়ানির রাজিম পরবে। তারণ এই ঝগড়া বিবাদের মুল কারণ হচ্ছে শয়তানের ওয়াসওয়াসা।
শয়তান সবচেয়ে বেশি সাফল্যমন্ডিত হয়, যখন সে কোন দম্পত্তির মাঝে ঢুকে তাদের
মধ্যে ভেজাল বা ঝগড়া বাজিয়ে দিতে পারে। শয়তান সবসময় চেষ্টা করে, মানুষের মধ্যে ঝগড়া
বিবাদের সৃষ্টি করতে। কিন্তু সে সময় অবশ্যই একজন আদর্শবান স্ত্রী চুপ থাকবে। সে তার
স্বামীর উপরে কোন কথা বলবে না। কারণ সে বুঝবে যে, এখন স্বামী রাগ হয়ে গেছে, এ সময় যদি
সেও রাগ হয়, এর ফলে ঝগড়া বিবাদ বাড়তে থাকবে। এই হলো আদর্শবান স্ত্রীর চার নম্বর গুন।
পাচ নম্বর হচ্ছে; স্বামীকে ভালো কাজের জন্য ধন্যবাদ জানানো। একজন আদর্শ
স্ত্রী স্বামীকে ভালো কাজের জন্য ধন্যবাদ জানাবে। একজন আদর্শবান স্ত্রীর কাজ হচ্ছে
স্বামী যখন কোন ভালো কাজ করবে। তখন অবশ্যই তাকে সাধুবাদ জানানো এবং ধন্যবাদ জানানো।
কিন্তু অনেকে আছে যারা স্বামীকে বৎসনা দেয়, অপমান করে এবং বিভিন্ন রকমের কটু কথা বার্তা
বলে। কিন্তু একজন আদর্শবান স্ত্রী অবশ্যই ভালো কাজের জন্য তার স্বামীকে ধন্যবাদ জানাবে
এবং তাকে উৎসাহ দিবে উদ্দিপনা দিবে। প্রত্যেকটি সফল পুরুষের পিছনে একজন মহিয়সী আদর্শবান
নারীর ভূমিকা অনেক গুরুত্বপুর্ণ। কেননা তারা তাদের কর্মকান্ডের মাধ্যমে স্বামীকে উৎসাহ
দিয়ে থাকে।
ছয় নম্বর হচ্ছে; স্বামীর সাথে আড্ডা দেওয়া, গল্প করা, আনন্দ ফূর্তি করা।
বিশ্বনবী মোহাম্মদ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মাঝে মধ্যে আম্মাজান
আয়শা সিদ্দিকা রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা এর কোলে মাথা পেতে ঘুমিয়ে থাকতেন এবং গল্প
করতেন। আবার আম্মাজান আয়শা সিদ্দিকা রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা নবীজির কোলের মধ্যে
শুয়ে থাকতেন এবং গল্প করতেন।
তাই অবশ্যই স্বামীকে সময় দিবেন, স্বামীর সাথে আড্ডা দিবেন, মাঝে মধ্যে
বিভিন্ন যায়গায় ঘুরতে যাবেন। কিন্তু অনেক স্বামী আছেন, যারা কখনও তার স্ত্রীকে বাইরে
ঘুরতে নিয়ে জান না। এচার কখনোই করা উচিত নয়। স্বামী স্ত্রীর দাম্পত্য জীবন হচ্ছে অত্যান্ত
সুখের জীবন, যেভাবে সুখ শান্তি হয়, সেটাই করতে হয়।
সাত নম্বর হচ্ছে; নিজে সর্বদা হাসিখুশি থাকতে হবে এবং সেজে গুজে থাকতে
হবে। কখনই স্বামীর সামনে মন খারাপ করে থাকা যাবে না। নোংরা হয়ে থাকা যাবে না। করাণ
আপনি যদি মন খারাপ করে থাকেন এবং নোংরা হয়ে থাকেন, এতে করে আপনার স্বামীরও কিন্তু মন
খারাপ হয়ে যাবে।
আট নম্বর হচ্ছে; অবশ্যিই সবসময় পর্দার মধ্যে থাকতে হবে। কেননা পর্দা ছাড়া
একজন নারীর কোন উপায় নেই। একজন মেয়ে যত বেশি পর্দা করবে, তার উপর আল্লাহ তায়ালার রহমত
এবং বরকত তত বেশি নাজিল হবে। এবং যে নারী পর্দায় আবদ্ধ থাকে, সে সর্বদা শয়তানের ফেতনা
থেকে বেচে থাকতে পারে। তাছাড়াও পর পুরুষের খারাপ দৃষ্টি থেকেও সে বেঁচে থাকবে ইনশাআল্লাহ।
নয় নম্বর হচ্ছে; স্বামী কাজ থেকে বাড়িতে ফিরলে তার খেদমত করবে। একজন আদর্শবান
স্ত্রী অবশ্যই স্বামীকে দেখলেই তার মনের অবস্থা বুঝতে পারবে। সে বুঝতে পারবে তার স্বামী
এখন কি চায়। তাকে শরবত বানিয়ে দেওয়া। অসুস্থ হলে তার সেবা শশ্রুষা করা, তার যাবতীয়
কাজগুলো করে দেওয়া। এবং যদি গোসল করতে চায়, অসুস্থ অবস্থায় তার গোসলের প্রয়োজনীয় সামগ্রীগুলো
এগিয়ে দেওয়া। সোজা কথা খেদমত করাই হচ্ছে একজন আদর্শবান স্ত্রীর নম্বর কাজ।
দশ নম্বর হচ্ছে; স্বামীর হৃদয় জয় করবার জন্য সর্বদা চেষ্টা করা। এই হলো
আদর্শবান স্ত্রীর দশটি গুন। এই গুনগুলো যে স্ত্রীর মধ্যে পাওয়া যাবে, তিনি হচ্ছেন একজন
আদর্শবান স্ত্রী। তার উপর সর্বদা আল্লাহ পাকের রহমত এবং দয়া বর্ষিত হতে থাকে। সে যে
কোন কাজে যাবে সব কাজে সফল হবে। এবং সে পরিবারটি হবে একটি জান্নাতের বাগিচা। সে সংসারে
আল্লাহ তায়ালা রহমত দিবেন এবং শান্তি দিবেন। এবং ঐ সংসারটিকে আল্লাহ তায়ালা বালা-মুসিবত
থেকে হেফাজত করবেন।
স্বামী স্ত্রীর মধ্যে আল্লাহ তায়ালা এমন মোহব্বত পয়দা করে দিবেন যে, শয়তানো
তাদের কোন ক্ষতি করতে পারবে না, ইনশাআল্লাহ।
এজন্য একজন আদর্শবান স্ত্রীর দশটিগুন যদি কোন মেয়ে অর্জন করতে পারে, ইনশাআল্লাহ
এই মেয়েকে তার স্বামী কলিজা দিয়ে ভালোবাসবে। ঐ স্ত্রীর সংসার অবশ্যই টিকে থাকবে, আল্লাহ
তায়ালার শান্তিতে পরিপূর্ণ করে দিবেন। এবং তার পেট থেকে যে সন্তান জন্ম নিবে, তাকে
আল্লাহ তায়ালা নেক সন্তান হিসেবে কবুল করবেন। সে কখনই কষ্ট পাবে না। সে দুনিয়াতে হবে
অনেক দামি একজন মহিলা এবং পরকালে হযরত আছিয়া,
হযরত ফাতেমা রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা এবং মা খাদিজা রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা’র
মত জান্নাতে যাবে।
আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামিন আমাদের মেয়ে সন্তানদেরকে এমন আদর্শবান মেয়ে
সন্তান হওয়ার তৌফিক দান করুক আমিন।