আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ
আশা করি আল্লাহ তায়ালার অশেষ মেহেরবানীতে আপনারা সবাই ভাল আছেন। আজ আমরা জানবো
নারীরা কোন কোন কারণে জাহান্নামে যাবে। সম্মানিত মা বোনেরা আমার এই আলোচনা কোন বিশেষ পক্ষকে হেও করার জন্য নয়। বরং আমার উদ্দেশ্য হচ্ছে, প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম এর একটি হাদীসের আলোকে বাস্তব কিছু ভুলভ্রান্তি তুলে
ধরা। যা আপনাদের মধ্যে পাওয়া যায়। আজকের সমাজের আমাদের মা বোনদের
অনেক রয়েছেন যারা দ্বীনদারিত্তের ক্ষেত্রে মহৎ এবং শ্রেষ্ঠ।
তারা অনুগত
নেক্কার, রোজাদার, পরহেজগার আর এই সকল মহীয়সী নারীদের ব্যাপারে কুরআন বলেছেঃ বিভিন্ন পুরস্কারের কথা। শ্রেষ্ঠ মহীয়সী নারী হযরত মরিয়ম আলাইহিস সালাম কেও নিয়েও পবিত্র কুরআনে
গোটা একটি সুরাহ নাজিল হয়েছে। কিন্তু তারপরও
ভুলভ্রান্তির দরুন রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেন ৯৯ জন নারীদের মধ্য থেকে একজন জান্নাতে যাবে আর বাকি সবাই জাহান্নামে যাবে।
উসামা ইবনে জায়েদ রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু সাল্লাম বলেছেনঃ আমি জান্নাতের গেটে দাড়ালাম দেখলাম যারা তাতে প্রবেশ করেছে তারা অধিকাংশই ছিল দুনিয়াতে দরিদ্র, অসহায়। আর ধনী
ও প্রভাবশালীদের আটকে দেওয়া হয়েছে তবে তাদের মধ্যে যাদের জাহান্নামে যাওয়ার ফয়সালা হয়ে গেছে তাদের কথা আলাদা। আর আমি জাহান্নামের প্রবেশ
দরজায় দাড়ালাম দেখলাম যারা প্রবেশ করেছে তাদের অধিকাংশ নারী।
এ হাদিস মোবারক পাঠ করে মানুষ অনেক পেরেশান হয়ে যায়। বিশেষ করে নারী সমাজ।
এটা যেহেতু মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বানী তাই চিন্তা হবারি কথা।
এবং মনে প্রশ্ন আসার কথা যে, নারীরা এত বেশি পরিমানে কেন জাহান্নামে যাবে।
সেই প্রশ্নটিই রাসূল সাল্লাহু সাল্লাম জীবিত থাকা অবস্থায় একজন নারী করেছিলেন। মুসলিম শরীফের হাদীসে আছে আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ হে নারীগণ তোমরা দান ছোদকা করো, বেশি বেশি করে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো। কেননা আমি জাহান্নামে তোমাদের অধিক হারে দেখেছি।
এ কথা শোনার পর উপস্থিত মহিলাদের মধ্যে থেকে একজন যার নাম ছিল জাজলা তিনি প্রশ্ন করলেন, ইয়া রাসুল্লাল্লাহ! আমাদের এই অবস্থা কেন?
কেন জাহান্নামে আমরা বেশি সংখ্যায় যাব। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম বললেনঃ তোমরা স্বামীর প্রতি অকৃতজ্ঞ ও বেশী বেশী অভিশাপ দাও। বলতে খারাপ শোনা গেলেও আসলে আজকে আমাদের সমাজে নারীদের বাস্তব চিত্র অনেকটা এরকমই। যা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম বলে গিয়েছেন চৌদ্দশ বছর পূর্বেই।
দাম্পত্য জীবনে
এমন অনেক সুখী নারীকে দেখা যায়, স্বামীর সামান্য একটু ভুল হলেই বিগত জীবনের স্বামীর সাথে সুখের সংসার করেছে ভালোবাসার প্রতিটি মুহূর্ত কাটিয়েছে তা
বেমালুম ভুলে যায়। তার অবদানকে মুহূর্তে অস্বীকার করে। অকৃতজ্ঞতার সুরে বলে তুমি আমার জন্য কি করেছো। আমি মেয়ে হয়েছে বিধায় তোমার সাথে সংসার করছি। তোমার ঘরে আসার পর আমি কিছুই পেলাম না। তুমি আমার জীবনটা বরবাদ করে দিয়েছে ইত্যাদি ইত্যাদি।
মহিলারা সামান্য কারণেই আবেগী হয়ে যায় তখন তারা হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলে এজন্য রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নারীদের সাথে সর্বদা সদাচরণের কথা বলেছেন। তাদের সাথে উত্তেজনা পরিহার করে, নম্র ভাষায় কথা বলতে বলেছেন।
একইভাবে নারীদেরকেও বলেছেন স্বামীর প্রতি অনুগত হওয়ার জন্য। নারীদের খাটো করা বা তাদের অবমূল্যায়নের উদ্দেশ্য নয় বরং আমার মা বোনদেরকে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচাতে আজকে গুরুত্বপূর্ণ ১৫ টি কারণ যে ভয়াবহ অভ্যাসগুলো আমাদের মা-বোনদের জাহান্নামের পথ ধরিয়ে দিচ্ছে।
এক নারীদের মধ্যে ফজরের নামাজ কাজা করাটা খুব বেশি দেখা যায়। এমনকি অনেক দ্বীনদার নামাজি নারীরাও ফজরের নামাজ কাজা করে ফেলে।
তেমনি ভাবে নারীদের আরো একটি ভুল যা তাদের জাহান্নামে নিয়ে যায় তা হল বেশিরভাগ নারী যাকাত দেয়ার ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। খবর নিয়ে দেখা যায় একজনের আলমারী ভর্তি সোনা রুপার গহনা আর যাকাত দিতে বললে, তারা বলে আমার কাছে নগদ টাকা নেই। হে বোন যেনে রাখুন এই শখের গহনা আপনার জন্য কাল হয়ে দাঁড়াবে, জাহান্নামে যাওয়ার কারণ হতে পারে।
তাই প্রয়োজনেই গহনা বিক্রি করে দিয়ে হলেও চাকা দিয়ে দেওয়া হলো বুদ্ধিমানের কাজ। তাছাড়া যেসব নারীর উপর যাকাত ফরয হয় তাদের জন্য কুরবানী করা ওয়াজিব হয়। কিন্তু আমরা একশত এর মধ্যে একজন কেউ খুঁজে পাইনা যারা নিজের কাছে সম্পদ থাকা সত্ত্বেও নিজের টাকা পয়সা খরচ করে পুশু কিনে কোরবানি করেন। অধিকাংশ মহিলার স্বামীর উপর নির্ভর করে থাকে, নিজের উপর কুরবানী ওয়াজিব তা জেনেও খবর রাখে না। তৃতীয় কারণ অনেক নারীর আরেকটি মারাত্মক ভুল হলো যে তারা, গোসল ফরজ হওয়ার পরেও নাপাক অবস্থায় চলাফেরা করে, নানান কারণে গোসল করতে দেরি করে, এমনটি একেবারে করা উচিত না। পাক পবিত্রতা ঈমানের অঙ্গ।
অনেক মেয়েরাই নেইলপলিশ লাগিয়ে থাকেন, অথচ নেলপলিশ লাগানোর ফলে ওযু হয় না এই নেলপলিশ তুলতেও সময় লাগে। তাই অনেক নেলপলিশ করা নারী নামাজ ছেড়ে দেয়, আবার অনেকে নেলপলিশ না তুলেই অজু করে নামাজ আদায় করে।
ফলে সে মূলত ওযু ছাড়া নামাজ পরল। কারণ যতক্ষণ নেলপালিশ না সরাবে ততক্ষণ ওযু হবে না, আর অযু না হলে, নামাজ হবে না। তেমনিভাবে অধিকাংশ নারী পর্দা করার ব্যাপারে উদাসীন। যা ভাষায় প্রকাশ করা অসম্ভব।
কোন বিয়ের অনুষ্ঠানে গেলে, তা ভালোভাবে হাড়ে হাড়ে টের পাওয়া যায়। বিশেষ করে আমাদের বাঙালি সংস্কৃতিতে ৯৫ ভাগ মুসলমানের দেশ কেউ গায়ে হলুদের মত অপসংস্কৃতি এবং বিয়ের অনুষ্ঠানে নৃত্যনতুন হাইব্রিট কালচারের উত্থানে আমাদের মা বোনদেরকে অশ্লীলভাবে নাচ-গান এবং বিভিন্ন বেপর্দাগীরি কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হতে দেখা যায়। তাছাড়া দু'জন নারী যখন মিলিত হন তখন তাদের আলোচনার বিষয়বস্তু হয়, তৃতীয়জনের গীবত করা। আর অধিকাংশ নারীদের স্বভাবই এমন যে তারা কয়েকজন একত্র হলে, কথা না বলে থাকতে পারেন না। আর কথার বিষয়বস্তু হয়ে থাকে গীবত পরনিন্দা করা। আর গীবত করতে করতে অনেক নারী জাহান্নামের দরজায় পৌছে যায়।
এক
বাদশার ঘটনা; তিনি ঘোষণা দিলেন, যদি কেউ চমৎকার করে ডাহা মিথ্যা বলতে পারেন, তাকে পুরস্কার দেয়া হবে। যে যত মনের মাধুরী মিশিয়ে ডাহা মিথ্যা গল্প বলতে পারবে, তাকে শ্রেষ্ঠ পুরস্কার দেয়া হবে। তখন অবশেষে একজন বলল, আমি এক জায়গায় অনেক মহিলাকে বসে থাকতে দেখলাম, কিন্তু সেখানে সকলেই চুপচাপ, তারা কেউ কারো সাথে কথা বলছে না, তখন বাদশা উচ্চস্বরে হেসে উঠলেন এবং বললেন যত মিথ্যে গল্প বলা হয়েছে এ গল্পটি সর্বশ্রেষ্ঠ।
কেননা মহিলারা চুপচাপ এক জায়গায় কখনো বসে থাকে না। তারা তো অবশ্যই একে অপরের বিরুদ্ধে, ননদের বিরুদ্ধে, শাশুড়ির বিরুদ্ধে, স্বামীর বিরুদ্ধে অথবা নিজ পুত্রবধূর বিরুদ্ধে,
গীবত শিখায়েত করতেই থাকবে। আল্লাহ আমাদের মা বোনদেরকে গীবত শিখায়েতের হাত থেকে রক্ষা করুন। তার পরিবর্তে ধৈর্য ধারণ করুন, আল্লাহ আপনাকে উত্তম প্রতিদান দিবেন।
৭
নম্বর অধিকাংশ নারীরা খুবই কৃপণ হয়ে থাকেন, দান-সদকা করতে খুবই কৃপণতা করে থাকে। যদি নারীরা বেশি বেশি দান সদকা করে, তাহলে আল্লাহ তাদেরকে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচিয়ে দিবেন। কোন নারী যদি
ভুলক্রমে কোন অন্যায় করে ফেলে, তাহলে ভুল স্বীকার করতেও লজ্জা করে, দেরি করে।
অথচ এ দুনিয়ায় ক্ষমা চাওয়া টা খুব সহজ, কিন্তু কেয়ামতের দিন এর জবাব দেওয়াটা খুব কষ্টকর।
এছাড়া নারী রাগের মাথায় অনেক কুপরিকালাম উচ্চারণ করে এমন কথা বলে দেয় যার ফলে মানুষের ঈমান হারা হয়ে যায়। কুফুরি কালাম এর মধ্যে সবচেয়ে বড় কুফরী হলো স্বামীর বিরুদ্ধে নারীর মিথ্যা অভিযোগ। তেমনি ভাবে আল্লাহতালার বিরুদ্ধে অভিযোগ আরম্ভ করে তারা। যেমন বলে, আল্লাহ আমার দোয়া শুনেন না, এখন আর আল্লাহর কাছে দোয়া করি না।নাউযুবিল্লাহি মিন যালেক।
একদিন একজন বয়স্ক মুরুব্বি মহিলার সাথে আমার কথা হলো, আমি জানতে পারলাম, সে নামাজ পড়ে না। তখন আমি জিজ্ঞেস করলাম; নামাজ কেন পড়েন না? সেই মহিলা বললেন; কি করব? আল্লাহ তাআলা আমার সবসময় রোগব্যাধি দেয়। আমাকে খারাপ রাখে, তাই রাগ করে নামাজ পড়িনা। নাউজুবিল্লাহ।
প্রিয় বোনদের বলি, যারা হতাশ হয়ে গিয়েছেন, ভাবছেন আপনার ডাক হয়তো আল্লাহ শুনছেন না, কখনোই না, আল্লাহ আমাদের প্রত্যেকের ডাক শুনেন। আপনি ধর্য্যধারণ করুন। নিজের ভুলগুলো খুঁজে বের করুন, কেন আপনার ডাক আল্লাহ পর্যন্ত পৌঁছায় না। আর যদি দেরিতেও পৌছায় তাও বা আল্লাহ ছাড়া আপনার উপায় কি? কোনভাবেই আল্লাহর উপর অসন্তুষ্টি হওয়া যাবে না।
আল্লাহ যদি ডাক নাও শুনে থাকেন, সেখানেও কল্যাণ আছে। আর না শুনার কথা আল্লাহ বলেননি। আল্লাহ বলেছেনঃ আমি তোমাদের সবার ডাক শুনি, কারোটা সাথে সাথে কবুল হয়, কারোটা দেরিতে, কারোটা আল্লাহ রব্বুল আলামীন পরকালে উত্তম জাজা খায়েরের বিনিময়ে রেখে দেন।
নারী সমাজের আরেকটি বড় ভুল, তারা কোন বিধর্মী হাইব্রিড কালচার পেলে তা লুফে নেয়। কিন্তু যদি বলা হয়, এটি নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সালাম এর সুন্নত তখন সে দিকে ফিরেও তাকায় না। আরেকটি বিষয় হচ্ছে, স্বামী কি চুরি করে আনছে, ঘুসের টাকা আনছে, স্বামী কি হালাল উপার্জন করছে না করছেনা, তা নিয়ে তাদের মাথাব্যাথাই নেই। নিজের চাহিদা প্রয়োজন মিটলেই হলো, কিন্তু এটি উচিত নয়।
একজন রমনী হিসাবে আপনারও উচিত, আপনার চাহিদার যোগান দিতে গিয়ে, যেন কখনোই আপনার স্বামী হারাম পথ বেছে নেন। তেমনিভাবে আল্লাহ তায়ালা কোন নারীকে যদি ভালো ঘরে জন্ম দেন। ধনী পিতার আদরের দুলালী হন, তার চেহারা যদি সুন্দরী হয়, তখন সে এতটাই বেপরোয়া ও অহংকারী হয়ে উঠে যে, তার সামনে অন্য কারো সুনাম করলে সে বরদাস্ত করতে পারে না।
অহংকারী একজন নারীকে জাহান্নামে পৌঁছার জন্য যথেষ্ট। মাটির মানুষ মাটির সাথে মিশে যাবে। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন পবিত্র কুরআনে বলেন; আমি তোমাদের মাটি থেকে সৃষ্টি করেছি, আর এই মাটিতে ফিরিয়ে নিয়ে যাব। অতপর এই মাটি থেকে তুলে আনব। তাই এই সৌন্দর্য্যের কোন অহংকারই কাজে আসবে না। বরং
দ্বীন দারিত্তই আপনাকে শ্রেষ্ঠ করবে।
তাছাড়া অধিকাংশ নারী
কুধারনার রোগী হয়ে থাকেন। আর সামান্য সন্দেহ থেকে কুধারণা, আর সে কুধারনা থেকে মিথ্যা অপবাদের
মত কবীরা গুনাহে লিপ্ত হয়ে যান। যা জাহান্নামে নিয়ে যাওয়ার মত একটি কারন। আজকাল যে বিষয়টি সবচেয়ে বেশি দেখা যায়, তা হল কোন কারণে স্বামীর সাথে ঝগড়া হলে, স্বামীকে এমন ভাবে রাগান্বিত করে, স্বামীকে এমন এমন কথা বলে, যাতে স্বামিও প্রকাশ্যে কিংবা গোপনে এমন বাক্য বলে দেয়, যাতে তালাক হয়ে যায়। আর তালাক হয়ে যাওয়ার পরে
সে স্বামীর সাথে সংসার করতে থাকে। যা ইসলাম অত্যন্ত মারাত্মক হারাম কাজ। আল্লাহ আমাদের বদমেজাজের হাত থেকে রক্ষা করুক আমিন।
তাছাড়া অধিকাংশ নারীর
নেক আমলে দেখা যায় শুধুমাত্র লোক দেখানোর জন্য। কোন কোন পুত্রবধূ আমল করেন শ্বাশুরির ভয়ে, কিংবা লোকে কি বলবে, এভয়ে তারা আমল করে। যেখানে আল্লাহর ভয় থাকে না আল্লাহর সন্তুষ্টির নিয়ত থাকে না। আর যার ফলে তার
আমল ছোয়াব শুন্য হয়ে যায়। নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ
ফরমান ৯৯ জন নারীর মধ্যে একজন শুধু জান্নাতে যাবে। আর বাকি সবাই জাহান্নামে যাবে।
এ হাদিসের আলোকে
যা আলোচনা করা হলো তা নারীদের জন্য খুবই জরুরী। আশা করি আমাদের মা-বোনেরা এ বিষয়ে গুরুত্বের সাথে গ্রহণ করবেন। আমি জানি আমাদের এই দেশে
স্বতি-সাধী, পরেজগার, ফরমাবরদার, রোজাদার, ধৈর্যশীলা, সৎকর্মপরায়ন নারী রয়েছেন। যারা আমাদের মা বোনদের মধ্যে আদর্শ।
আমরা চাই বিপথগামী হয়ে গিয়েছেন, যারা এ সকল অন্যায়ের সাথে জড়িত আছেন, তারা আপনাদের এই ভুলগুলো শুধরে নিবেন ইনশাআল্লাহ।
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আপনাদেরকে জান্নাতুল ফেরদাউসের জন্য কবুল
ও মঞ্জুর করে নিবেন। আমিন।
……………………………………………………………………………….
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহী ওয়া বারকাতুহু
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
সুপ্রিয় দর্শক মন্ডলী
স্বামী
স্ত্রীর সম্পর্ক কতটা গাড় তার প্রমাণ পবিত্র কুরআনুল কারীমে মহান আল্লাহ তাআলা বলেন; তারা তোমাদের পোশাকস্বরুপ, এবং তোমরাও তাদের পোশাকস্বরূপ” সুরাহ
বাক্বারা আয়াত ১৮৭।
তিনি
আরও বলেন; তোমরা তোমাদের স্ত্রীদের সাথে সৎভাবে জীবন যাপন কর” সুরাহ নিসা আয়াত ১৯।
একজন
নারী স্ত্রী হয়ে স্বামীর ঘরে আসার পর থেকে স্ত্রীর সমস্ত দায় দায়িত্ব স্বামীর উপর
বর্তায়। দুজনে একে অপরকে যতটা মানিয়ে নিয়ে ভালোবাসা গভির করতে পারবে, সংসারে ততোটা
সুখের হবে।
মনে
রাখতে হবে, প্রত্যেক স্ত্রী স্বামীর কাছে এমন কিছু আশা করে, যা সে মুখে বলতে পারে
না। কিন্তু স্বামীকে তা বুঝে নিতে হয়।
তার
মধ্যে থেকে ৪টি গুরুত্বপূর্ণ চাওয়া তার সাথে স্বামীর প্রতি স্ত্রীর একটি
গুরুত্বপূর্ণ চাওয়া এই ভিডিওর মাধ্যে আলোচনা করবো ইনশাআল্লাহ।
আজেক
ভিডিওটি প্রত্যেক বিবাহিত নারী ও পুরুষের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি ভিডিও এবং
যারা বিবাহ করেন নি, ভবিষ্যতে যেনে রাখার স্বার্থে তাদের জন্যও ভিডিও টি সমান ভাবে
গুরুত্বপূর্ণ।
তাই
ভিডিওটি না টেনে শেষ পর্যন্ত দেখুন। আর শেষ পর্যন্ত না দেখলে অনেক কিছু মিস করে
ফেলবেন।
তো
চলুন শুরু করা যাক।
একজন
স্ত্রী স্বামীর কাছ থেকে ৪টি বিষয় খুব বেশি চায়। আর তা হলো ১ নাম্বার স্বামী যেন
তার সাথে ভালো আচরণ করে। প্রত্যেক স্ত্রী চায় তার স্বামী যেন তার সাথে খুব ভালো
আচার ব্যবহার করে।
আর
এটা বাস্তব যে, স্ত্রীকে নরমসুরে আদেশ করলে সে সেটা শুনে। কিন্তু কড়া ভাষায় জোড়
পূর্বক কোন আদেশ বা হুকুম করলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তারা শুনে না।
অনেক
স্বামী হয়তো ভেবে থাকেন যে, কড়া ভাষায় কথা বললেই গড়ম দেখিয়ে তার উপর হুকুম জারি
করবো। কিন্তু তাতে হীতে বিপরিত হতে পারে। কর্কশ ভাবে কথা বরে, জোরপূর্বক আদেশ করা
মোটেও ঠিক নয়। হাদিস শরীফে আছে হযরত আবু হুরায়রা রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে
বর্ণিত; আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
তোমরা তোমাদের স্ত্রীদের জন্য ময্গলকামী হও।
কারণ
নারীকে পাজরের হার থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে। অর্থাৎ তাদের চরিত্র বাকা হাড়ের মতো। আর
পাজরের হাড়ের সবচেয়ে বেশি বাকা হলো তার উপরের অংশ, যদি তুমি এটাকে সোজা করতে চাও
তাহলে ভেঙ্গে যাবে।
আর
যদি তাকে ছেড়ে দাও, তাহলে তো বাকাই থাকবে। তাই তোমরা নারীদের জন্য কল্যানকামী হও।
সহীহ বুখারী হাদিস নাম্বার ৩৩৩১, তিরমিযি হাদিস নাম্বার ১১৮৮।
মুসলিম
শরীফের আরেক বর্ণনায় আছে, মহিলাকে পাজরের বাকা হাড় থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে। সে কখনও
একভাবে তোমার জন্য সোজা থাকবে না।
অতএব
তুমি যদি তার কাছ থেকে উপকৃত হতে চাও, তাহলে তার এ বাকা অবস্থাতেই হতে হবে। আর যদি
তুমি তা সোজা করতে চাও তাহলে তা ভেঙ্গে ফেলবে। আর তাকে ভেঙ্গে ফেলা হলো, তালাক
দেওয়া। মুসলিম হাদিস নাম্বার ১৪৬৮।
উক্ত
হাদিস দ্বারা আমরা বুঝতে পারলাম, স্বামী নম্রভাবে ভালোবেসে স্ত্রীর কাছ থেকে অনেক
উপকার লাভ করতে পারে। তবে জোরপূর্বক যদি উপকার পেতে চাই। তাহলে স্বামীর
ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে। এমন ক্ষতি হতে পারে, যে শেষ পর্যন্ত বিবাহ বন্ধন বিচ্ছেদ
ঘটতে পারে।
দ্বিতীয়
নাম্বার স্বামী যেন খুব বেশি স্ত্রীর প্রতি খেয়াল রাখে। মাতাপিতা আত্মিয়স্বজনদের মায়ার বন্ধন ছেড়ে একজন স্ত্রী স্বামীর ঘরে আসে।
শুধুমাত্র স্বামীর ভরসায়। স্ত্রী চায় স্বামী যেন তাকে খুব বেশি ভালোবাসে এবং সবসময়
তার খেয়াল রাখে। কিন্তু এ কথা সবাই মুখে বলতে পারেনা। স্বামীকে তা বুঝে নিতে হয়।
স্ত্রীর খেয়াল রাখা তাকে ভালোবাসা একজন স্বামীর জন্য বিশেষ দিায়িত্ব।
তিন
নাম্বার স্বামী যেন স্ত্রীর পিতা-মাতাকে ভালোবাসে। প্রত্যেক স্ত্রী চায় বিয়ের পর
তার স্বামী যেন তার পিতা-মাতা অর্থাঃ শ্বশুর শাশুরী ও তার পিতা-মাতার দিক থেকে
সমস্ত আত্মীয়দের সাথে সব সময় সু সম্পর্ক রাখে।
সত্যি
তো এটাই যে, নিজের পিতা-মাতা ও আত্মীয়স্বজন দের সাথে যেমন সুসম্পর্ক রাখা, তাদেরকে
সম্মান করা, তাদেরকে ভালোবাসা যেমন জরুরী বিষয়, তেমনিভাবে স্ত্রীর পিতা-মাতা ও
আত্মীয় স্বজনদের সাথে সুসম্পর্ক রাখা, তাদের সম্মান করা, তাদের ভালোবাসাও অত্যান্ত
জরুরী।
কিন্তু
অনেক স্বামী আছেন, বিয়ের পর স্ত্রীকে তার পিতা-মাতা ভাই বোন ও আত্মীয় স্বজনদের
বাড়ী যেতে বাধা প্রদান করে, এটা ঠিক নয়। তবে হ্যা, স্ত্রী যদি সে যায়গায় গিয়ে
ইসলাম বিরোধী কাজ করে, আর এটা ভয় থাকে যে, স্ত্রী খুব ঘনঘন সেখানে গেলে সে, ইসলাম
বিরোধী কোন অন্যায় কাজের সঙ্গে জড়িয়ে পড়তে পারে, তাহলে সে সময় স্ত্রীর হেফাজত করা
স্বামীর দায়িত্ব।
সেক্ষেত্রে
স্ত্রীকে সেখানে যাওয়া থেকে বাধা প্রদান করা যেতে পারে। তবে এমনি খালি খালি রাগ
করে, কিংবা সন্দেহ বসতঃ অথবা কোন কারণ ছাড়া স্ত্রীর সাথে আত্মীয় স্বজনের মায়ার
বন্ধন নষ্ট করা কঠিন বড় অপরাধ ও গুনাহের কাজ।
চতুর্থ
নাম্বার হলো: স্ত্রীর হাত খরচ দেওয়া। স্ত্রীদের ব্যক্তিগত স্বাজসজ্জা কিংবা
অন্যান্য ব্যক্তিগত জিনিস ক্রয় করার জন্য অনেক সময় টাকার প্রয়োজন পরে। সেক্ষেত্রে
অনেক স্ত্রী লজ্জার কারণে স্বামীর কাছে টাকা চাইতে ইতস্ততা বোধ করে। সেক্ষেত্রে
প্রত্যেক স্বামীর উচিৎ হবে; স্ত্রী না চাইতেই, তাদের হাত খরচের জন্য প্রতি মাসের
শুরুতে আগে থেকেই কিছু টাকা দিয়ে রাখা। এতে করে স্ত্রী আপনার উপর সন্তুষ্ট থাকবে।
এবং সংসারো সুখের হবে।
এছাড়াও
যে কারণটি না বললেই নয়, সেটি হলো অনেক স্ত্রী নিজের শারীরিক চাহিদার কথা স্বামীকে
মুখ ফুটে বলতে পারে না। আবার স্বামীর অসর্তকতা ও অক্ষমতার কারণে স্ত্রীর যে চাহিদা
পূরণ হচ্ছে না, সেটাও অনেক স্ত্রী বলতে পারে না, ভয় বা লজ্জা থেকে। কিন্তু স্বামীর
যদি এমন কোন শারীরিক সমস্যা থাকে, তাহলে স্বামী নিজে থেকেই উদ্যোগী হয়ে একজন ভালো
চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে সুস্থ স্বাভাবিক জৈবিক ক্রিয়া সম্পাদন করা স্বামীর জন্য
একান্ত কর্তব্য।
এ
সমস্যার কারণে বর্তমানে পারিবারিক কলহ বেড়ে যাচ্ছে, এমনকি অহরহ সংসার ভেঙ্গে
যাচ্ছে। তাই সময় থাকতে প্রত্যেক স্বামীকে সাবধান হওয়া জরুরী।
আল্লাহু
সুবাহানাহু ওয়া তায়ালা আমাদের প্রত্যেককে যেন বুঝার তৌফিক দান করেন আমিন।
সুপ্রিয়
দর্শক দাওয়াতি কাজের স্বার্থে ভিডিওটি শেয়ার করে দিন। এবং আপনি যদি এই প্রথমবার
আমাদের ভিডিও দেখে থাকেন তাহলে আমাদের চেনেলটি সাবস্ক্রাইব করে রাখবেন। এবং পাশে
থাকা বেল আইকনটি ক্লিক করে রাখবেন।
আল্লাহ
সুবাহানাহু ওয়া তায়ালা আমাদের প্রত্যেককে যেন সুস্থ্য রাখেন, সুন্দর রাখেন,
নিরাপদে রাখেন, এই কামণায় আজকের ভিডিওটি এখানেই সমাপ্তি।
আস্সালামু
আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহু।